বাংলাদেশের পাইকারি বাজার গুলোর মদ্ধে ঢাকার চকবাজার অন্যতম। পুরান ঢাকার ঐতিহ্য এ চকবাজার। বাংলাদেশের দূর দুরান্ত থেকে এখান থেকে দেশীয় ও বিদেশি পন্য সামগ্রী নিয়ে অনেকেই ব্যবসা বানিজ্য করে থাকেন। যা কোথাও পাওয়া যায় না তা অনেকেই এই ঐতিহ্যবাহী চকবাজার থেকে পেয়ে থাকেন। গত রাতে হয়ে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা যা পুরো দেশবাসী শোকাহত।
স্থানীয়দের মতে প্রথমে এক পিকআপের সাথে প্রাইভেট কারের সংঘর্ষ, শোনা যাচ্ছে সেই পিকআপে ছিল সিলিন্ডার গ্যাস, সেটার বিস্ফোরণ আগে হয় অথবা হয় প্রাইভেট কারের সিএনজি বিস্ফোরণ৷ এর পাশেই ছিল হোটেল, হোটেলে রান্না হচ্ছিল গ্যাসে, সেই গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ সাথে থাকা বৈদ্যুতিক খুটিতে ট্রান্সফর্মারে বিস্ফোরণ।
সময় ৩০ মিনিট, আগুন ছড়িয়ে গেল ভবনে, ছিল নেল পালিশের কেমিকেলের গোডাউন থেকে শুরু করে পারফিউমের কেমিক্যাল। এমনকি লাইটার রিফিলের গ্যাসের ছোট ছোট জার। দুদিন আগেও সাত ট্রাক কেমিক্যাল ঢুকেছে।
গেল সপ্তাহেও দক্ষিণের মেয়র মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে হাতজোড় করেছেন কেমিকেল গোডাউন সরিয়ে নিতে, কেউ পারছে না তাদের সরাতে, এক এক বাড়িতেই ১৫-২০ টা গোডাউন আর শিল্পমন্ত্রনালয়ের খাতা বলছে পুরো পুরান ঢাকাতেই এ সংখ্যা ১০০ এর ও কম, মানে সিংহভাগই অনুমতিহীন।
পুড়ে ছাই হওয়া ওয়াহিদ ম্যানসনের ওয়াহিদ সাহেব মারা গেছেন আগেই, তার দু ছেলে এ ভবনে থাকতেন, ভাগ্যের কি পরিহাস, তারা যে কেমিক্যাল গোডাউন ভাড়া দিলেন, তার বিস্ফোরনেই প্রাণ গেছে নিজেদের পরিবারের লোকদের। পরদিন ছুটি থাকায় অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা একটু গুছিয়ে নিচ্ছিলেন, সেই গোছানোয় চিরতরে গোছানো।
ফায়ার সার্ভিস কি করেনি? সারারাত চেষ্টা করেছে, ৩৭ টা ইউনিট ছিল, বিশাল গাড়ি নিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। বিমান বাহিনী হেলিকপ্টার দিয়ে পানি ছিটিয়েছে, তাও ৪ টা হেলিকপ্টার। কী আর হয় তাতে? কেমিকেলগুলো সে পানিকে পাত্তাই দিতে চাইনি, পুরোটা জ্বলে, জালিয়ে তারপর নিভেছে প্রায় ৮ ঘন্টা পর! মৃতের সংখ্যা ৭৬, বাড়ার আশংকা, হতাহত অর্ধশত। আহতদের ঢাকা মেডিকেল এ ভর্তি করা হয়।
উল্লেখ্য এর আগেও পুরান ঢাকার নিমতলিতে ঘটে গেল অনেক তাজা প্রান কিন্তু তাতেও আমরা থামাতে পারি নাই অবৈধভাবে সংরক্ষন করা ক্যামিকেল। প্রশাসনের স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা আর কত নিমতলি চকবাজার ইতিহাস হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। আর এ থেকে আমরা শিক্ষা না নিলে প্রকৃতি তার নিজ হাতেই ব্যবস্থা নিবে এটাই স্বাভাবিক।